Thursday, October 31, 2019

সূরা আন-নাবা [(মহা) সংবাদ]

[মক্কায় অবতীর্ণ- আয়াত ৪০, রুকু ০২] [কোরআনে অবস্থান ৭৮, অবতীর্ণের অনুক্রম ৮০]

পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে-

১. কোন্ বিষয়টি সম্পর্কে তারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করছে?

২. (তারা কি) সেই মহাসংবাদের ব্যাপারেই (একে অপরকে জিজ্ঞেস করছে)?

৩. যে ব্যাপারে তারা নিজেরাও নানা মতে বিভক্ত;

৪. না, কখনো নয়, এরা অচিরেই (সে ঘটনাটি) জানতে পারবে,

৫. হ্যাঁ, অতি সত্বরই তারা (সে সম্পর্কে) জানতে পারবে।

৬. আমি কি ভূমিকে বিছানার (মতো করে) তৈরী করিনি?

৭. (ভূমিকে স্থির রাখার জন্যে) আমি পাহাড়সমূহকে (এর গায়ে) পেরেকের মতো গেড়ে রেখেছি,

৮. আমি তোমাদের জোড়ায় জোড়ায় পয়দা করেছি,

৯. তোমাদের ঘুমকে আমি শান্তির উপকরণ বানিয়েছি,

১০. আমি রাতকে (তোমাদের জন্যে) আবরণ করে দিয়েছি,

১১. আর দিনগুলোকে জীবিকা অর্জনের জন্যে (আলোকোজ্জ্বল) করে রেখেছি,

১২. আমি তোমাদের ওপর সাতটি মযবুত আসমান বানিয়েছি,

১৩. (এতে) স্থাপন করেছি একটি প্রোজ্জ্বল বাতি,

১৪. মেঘমালা থেকে আমি বর্ষণ করেছি অবিরাম বৃষ্টিধারা,

১৫. যেন তা দিয়ে আমি (শ্যামল ভূমিতে) উৎপাদন করতে পারি (নানা রকমের) শস্যদানা ও তরিতরকারি-

১৬. এবং সুনিবিড় বাগবাগিচা;

১৭. নিসন্দেহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের একটি দিন রয়েছে।

১৮. যেদিন শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে, (সেদিন) তোমরা দলে দলে (বেরিয়ে) আসবে,

১৯. (সেদিন) আসমান খুলে দেয়া হবে এবং তা অনেকগুলো খোলা দরজায় পরিণত হয়ে যাবে,

২০. পর্বতগুলোকে সরিয়ে দেয়া হবে অতপর তা মরীচিকার মতো হয়ে যাবে,

২১. নিশ্চয়ই জাহান্নাম হচ্ছে ফাঁদ-

২২. বিদ্রোহীদের জন্যে (নিকৃষ্টতম) আবাসস্থল,

২৩. সেখানে তারা কালের পর কাল ধরে পড়ে থাকবে,

২৪. সেখানে তারা কোনো ঠান্ডা ও পানীয় (জাতের) কিছুর স্বাদ ভোগ করবে না,

২৫. (সেখানে) ফুটন্ত পানি, পুঁজ, দুর্গন্ধময় রক্ত, ক্ষত ছাড়া কিছুই থাকবে না,

২৬. (এই হচ্ছে তাদের) যথাযথ প্রতিফল;

২৭. (কেননা) এরা হিসাব-নিকাশের (এ দিনটি থেকে কিছুই) আশা করেনি,

২৮. (বরং) তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে;

২৯. (অথচ) আমি (তাদের) যাবতীয় কর্মকান্ডের রেকর্ড সংরক্ষণ করে রেখেছি,

৩০. অতএব তোমরা আযাব উপভোগ করতে থাকো, (আজ) আমি তোমাদের জন্যে শাস্তির মাত্রা ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করবো না।

৩১. (অপরদিকে) আল্লাহভীরু লোকদের জন্যে রয়েছে (পরম) সাফল্য,

৩২. (সুসজ্জিত) বাগবাগিচা ও আংগুর (ফলের সমারোহ),

৩৩. (আরো রয়েছে) পূর্ণ যৌবনা সমবয়সী সুন্দরী তরুণী-

৩৪. এবং উপচে পড়া পানপাত্র;

৩৫. এখানে তারা কোনো বাজে কথা ও মিথ্যা শুনতে পাবে না,

৩৬. (এটা হচ্ছে) তোমার মালিকের পক্ষ থেকে (তাদের) যথাযথ পুরস্কার,

৩৭. আসমানসমূহ, যমীন ও এদের উভয়ের মাঝখানে যা কিছু আছে তার মালিক দয়াময় আল্লাহ তায়ালা, তাঁর সাথে কেউই বিতর্ক করার ক্ষমতা রাখে না,

৩৮. সেদিন (পরাক্রমশালী মালিকের সামনে) রূহ (জিবরাঈল) ও অন্যান্য ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে, দয়াময় আল্লাহ তায়ালা যাদের অনুমতি দেবেন তারা ছাড়া অন্য কেউই কথা বলতে পারবে না এবং (অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি যখন বলবে, তখন) সে সঠিক কথাই বলবে।

৩৯. সে দিনটিই সত্য, কেউ ইচ্ছা করলে (এখনো এই সত্যের দ্বারা) নিজের মালিকের কাছে একটা আশ্রয় খুঁজে নিতে পারে।

৪০. আমি অবশ্যই আসন্ন আযাব সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করে দিয়েছি, সেদিন মানুষ দেখবে তার হাত দুটি (এ দিনের জন্যে) কী কী জিনিস পাঠিয়েছে, (এ দিনকে) অস্বীকারকারী ব্যক্তি তখন বলে উঠবে, হায়, কতো ভালো হতো যদি মানুষ (না হয়ে) আমি (আজ) মাটি হতাম!

অনুবাদকঃ হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ।
প্রকাশনাঃ আল কোরআন একাডেমী লন্ডন।

No comments:

Post a Comment