[মক্কায় অবতীর্ণ-
আয়াত ৫০, রুকু ০২] [কোরআনে অবস্থান ৭৭, অবতীর্ণের অনুক্রম ৩৩]
পরম করুণাময় ও
অসীম দয়ালু আল্লাহ্র নামে-
১. মৃদুমন্দ ও
ক্রমাগতভাবে পাঠানো
(কল্যাণবাহী) বাতাসের
শপথ,
২. প্রলয়ংকরী ঝঞা বাতাসের শপথ,
৩. মেঘমালা বিস্তৃতকারী বাতাসের
শপথ,
৪. (মেঘমালাকে) যে (বাতাস) টুকরো টুকরো করে আলাদা করে দেয়-
তার শপথ,
৫. (মানুষের অন্তরে)
ওহী নিয়ে আসে যেসব (ফেরেশতা-) তাদের শপথ,
৬. (এটা মোমেনদের-)
ওযর (আপত্তির
সুযোগ না
রাখা) কিংবা কাফেরদের সতর্ক
(করার জন্যে),
৭. নিসন্দেহে তোমাদের
(পরকাল দিবসের)
যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা
সংঘটিত হবে;
৮. যখন আকাশের তারাগুলোকে জ্যোতিহীন করে দেয়া হবে,
৯. যখন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে,
১০. যখন পাহাড়গুলোকে (ধুলার মতো) উড়িয়ে
দেয়া হবে,
১১. যখন নবী রসূলদের সবাইকে নির্ধারিত সময়ে জড়ো করা হবে;
১২. (বলতে পারো)-কোন্ (বিশেষ) দিনটির জন্যে
(এ কাজটি)
মূলতবী করে রাখা হয়েছে?
১৩. (হ্যাঁ, সেটা রাখা হয়েছে)
চূড়ান্ত ফয়সালার দিনটির জন্যে,
১৪. তুমি কি
জানো সে
ফয়সালার দিনটি কেমন?
১৫. যারা (একে) মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে সেদিন তাদের ধ্বংস (অবধারিত)।
১৬. আমি কি
আগের (অবিশ্বাসী
যালেম) লোকদের
ধ্বংস করে দেইনি?
১৭. অতপর আমি পরবর্তী লোকদেরও (ধ্বংসের
পথে) পূর্ববর্তীদের সঙ্গী করে দেবো।
১৮. (হ্যাঁ সকল যুগের) অপরাধী ব্যক্তিদের
সাথে আমি এ (একই) ব্যবহার
করি।
১৯. (যাবতীয়) দুর্ভোগ
সেদিন তাদের জন্যে যারা (সত্যকে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে!
২০. আমি কি
তোমাদের (এক ফোঁটা) তুচ্ছ পানি থেকে সৃষ্টি করিনি?
২১. অতপর সেই
(তুচ্ছ পানির)
ফোঁটাকেই আমি একটি সংরক্ষিত স্থানে
(সযত্নে) রেখে দিয়েছি,
২২. (রেখে দিয়েছি)
একটি সুনির্দিষ্ট মেয়াদ
পর্যন্ত,
২৩. তারপর (তাকে) পরিমাণমতো সব (কিছু দিয়ে আমি পূর্ণাংগ একটি মানুষ হিসেবে তৈরী)
করতে সক্ষম হয়েছি, কতো সক্ষম (ও নিপুণ)
স্রষ্টা আমি!
২৪. (যাবতীয়) দুর্ভোগ
সেদিন তাদের জন্যে যারা (সত্যকে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে!
২৫. আমি কি
ভূমিকে (প্রয়োজনীয়
সামগ্ৰীসমূহের) ধারণকারী
করে বানিয়ে রাখিনি?
২৬. জীবিত ব্যক্তিদের যেমনি (সে ধারণ করে আছে) তেমনি মৃত ব্যক্তিদেরও (সে ধারণ করে),
২৭. আমি তাতে উঁচু উঁচু পর্বতমালা সৃষ্টি করে রেখেছি এবং আমি তোমাদের সুপেয় পানি পান করিয়েছি।
২৮. দুর্ভোগ তাদের জন্যে, যারা (এসব সত্যকে) মিথ্যা
প্রতিপন্ন করেছে।
২৯. (চূড়ান্ত বিচারের পর বলা হবে,) এবার চলো সেই জিনিসের দিকে যাকে তোমরা দুনিয়ায় মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে,
৩০. চলো সেই ধূম্রপুঞ্জের ছায়ার দিকে,
যার রয়েছে তিনটি (ভয়ংকর) শাখা,
৩১. এ ছায়া
(কিন্তু) সুনিবিড়
কিছু নয়,
এটা (তাকে) আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচাতে পারবে না;
৩২. (বরং) তা (তার ওপর)
বৃহৎ প্রাসাদতুল্য আগুনের
স্ফুলিংগ নিক্ষেপ করতে থাকবে,
৩৩. (মনে হবে)
তা যেন হলুদ বর্ণের (কতিপয়) উটের পাল;
৩৪. দুর্ভোগ তাদের জন্যে, যারা (একে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে।
৩৫. এ হচ্ছে সেই (মহাবিচারের) দিন, যেদিন কেউ কোনো কথা বলবে না,
৩৬. কাউকে সেদিন
(নিজেদের পক্ষে)
ওযর আপত্তি
(কিংবা সাফাই)
পেশ করার অনুমতি দেয়া হবে না যে, তারা কিছু ওযর পেশ করবে।
৩৭. দুর্ভোগ সেদিন তাদের জন্যে যারা
(একে) মিথ্যা
প্রতিপন্ন করেছে।
৩৮. (সেদিন পাপীদের বলা হবে,) আজকের দিন হচ্ছে চূড়ান্ত ফয়সালার দিন,
তোমাদের সাথে তোমাদের পূর্ববর্তী সকল মানুষকে আজ আমি
(এখানে) একত্রিত
করেছি।
৩৯. আজ যদি
(আমার বিরুদ্ধে)
তোমাদের কোনো অপকৌশল প্রয়োগ করার থাকে তাহলে তা
প্রয়োগ করো।
৪০. দুর্ভোগ তাদের জন্যে, যারা (একে) মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে।
৪১. (আল্লাহকে) যারা ভয় করেছে
(সেদিন) তারা (সুনিবিড়) ছায়ার
নীচে এবং
(প্রবাহমান) ঝর্ণাধারার
মাঝে অবস্থান করবে,
৪২. তাদের জন্যে ফলফলারির ব্যবস্থা থাকবে,
যা চাইবে তারা তাই (সেখানে) পাবে;
৪৩. (তাদের বলা হবে, দুনিয়ায়) তোমরা যা করে এসেছো তার পুরস্কার হিসেবে (আজ) তোমরা তৃপ্তির সাথে এসব খাও ও
পান করো।
৪৪. অবশ্যই আমি ভালো মানুষদের এমনিভাবেই পুরস্কার দিয়ে থাকি।
৪৫. সেদিন দুর্ভোগ তাদের জন্যে, যারা (এসব সত্যকে)
মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে!
৪৬. (হে অবিশ্বাসীরা,) কিছুদিন তোমরা এখানে খেয়ে নাও এবং কিছু ভোগ আস্বাদনও করে নাও, নিসন্দেহে
তোমরা অপরাধী!
৪৭. দুর্ভোগ সেদিন তাদের (জন্যে) যারা (এসব সত্যকে)
মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে।
৪৮. এদের যখন বলা হয়, তোমরা (আল্লাহর দরবারে)
নত হও, তখন তারা নত হয় না।
৪৯. (যাবতীয়) দুর্ভোগ
সেদিন তাদের জন্যে, যারা (এসব সত্যকে) মিথ্যা
প্রতিপন্ন করেছে!
৫০. (তুমিই বলো,)
এরপর আর
এমন কোন্ কথা আছে যার ওপর এরা ঈমান আনবে!
প্রকাশনাঃ আল কোরআন একাডেমী লন্ডন।
No comments:
Post a Comment