Thursday, October 31, 2019

সূরা আন-নাযিআত [যারা টেনে হিঁচড়ে বের করে/যারা টেনে হিঁচড়ে ছিনিয়ে নেয়]

[মক্কায় অবতীর্ণ- আয়াত ৪৬, রুকু ০২] [কোরআনে অবস্থান ৭৯, অবতীর্ণের অনুক্রম ৮১]

পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে-

১. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা নির্মমভাবে (পাপীদের আত্মা) ছিনিয়ে আনে,

২. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা সহজভাবে (নেককারদের রূহ) খুলে দেয়,

৩. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা (আমার হুকুম তামিল করার জন্যে) সাঁতরে বেড়ায়,

৪. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা (হুকুম পালনে) দ্রুত এগিয়ে চলে,

৫. শপথ (ফেরেশতাদের), যারা (নিজেদের) কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে।

৬. (যেদিন কেয়ামত আসবে), সেদিন ভূকম্পনের এক প্রচন্ড ঝাঁকুনি হবে,

৭. (কবর থেকে সবাইকে ওঠানোর জন্যে) সাথে সাথে আরেকটি প্রচন্ড ধাক্কা হবে;

৮. সেদিন (মানুষের) অন্তরসমূহ ভয়ে কম্পমান হবে,

৯. তাদের সবার দৃষ্টি হবে ভীত-সন্ত্রস্ত।

১০. তারা বলে, সত্যিই কি আমাদের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া হবে?

১১. আমরা পঁচে-গলে হাড্ডিতে পরিণত হয়ে যাওয়ার পরও (কি তা ঘটবে)?

১২. তারা বলে, যদি আমাদের আগের জীবনে ফিরিয়ে নেয়া হয়, তাহলে সেটা তো হবে খুবই লোকসানের বিষয়।

১৩. অবশ্যই তা হবে বড়ো ধরনের একটি গর্জন;

১৪. (গর্জন শেষ না হতেই) হঠাৎ দেখা যাবে, তারা (কবর থেকে উঠে সবাই যমীনের ওপর) সমবেত হয়ে গেছে।

১৫. (হে নবী,) তোমার কাছে কি মূসার কাহিনী পৌঁছেছে?

১৬. তাকে যখন তাঁর রব পবিত্র তুয়াউপত্যকায় ডেকে বলেছিলেন-

১৭. তুমি যাও ফেরাউনের কাছে, কারণ সে (তার মালিকের) বিদ্রোহ করেছে,

১৮. তুমি (তাকে) জিজ্ঞেস করো, তুমি কি (ঈমান এনে) পবিত্র হতে চাও?

১৯. আমি তোমাকে তোমার মালিকের (কাছে পৌঁছার একটা) পথ দেখাতে পারি, অতপর তুমি (তাঁকে) ভয় করবে,

২০. এরপর সে তাকে (আমার পক্ষ থেকে নবুওতের) বড়ো একটি নিদর্শন দেখালো,

২১. সে (আমার নবীকে) মিথ্যা সাব্যস্ত করলো এবং সে (তার) বিরুদ্ধাচরণ করলো,

২২. অতপর (ষড়যন্ত্র করার মানসে) সে পেছনে ফিরে গেলো,

২৩. সে লোকজন জড়ো করলো এবং তাদের ডাক দিলো-

২৪. এবং বললো, আমি হচ্ছি তোমাদের সবচেয়ে বড়ো রব’,

২৫. অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তাকে আখেরাত ও দুনিয়ার আযাবে পাকড়াও করলেন;

২৬. অবশ্যই এমন লোকের জন্যে এতে শিক্ষার নিদর্শন রয়েছে, যে (আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করে,

২৭. (তোমরা বলো,) তোমাদের (দ্বিতীয় বার) সৃষ্টি করা কি বেশী কঠিন, না আকাশ সৃষ্টি করা বেশী কঠিন? আল্লাহ তায়ালাই তা বানিয়েছেন।

২৮. আল্লাহ তায়ালা (শূন্যের মাঝে) তাকে উঁচু করে রেখেছেন, অতপর তাকে সুবিন্যস্ত করেছেন,

২৯. তিনি রাতকে (অন্ধকার দিয়ে) ঢেকে রেখেছেন, আবার তা থেকে দিনকে বের করে এনেছেন,

৩০. এরপর যমীনকে তিনি (বিছানার মতো করে) বিছিয়ে দিয়েছেন;

৩১. তা থেকে তিনি তার পানি ও তার উদ্ভিদরাজি বের করেছেন,

৩২. তিনি পাহাড়সমূহকে (যমীনের গায়ে পেরেকের মতো) গেড়ে দিয়েছেন,

৩৩. (এগুলো হচ্ছে) তোমাদের জন্যে এবং তোমাদের জন্তু জানোয়ারদের (উপকারের) জন্যে;

৩৪. তারপর যখন বড়ো বিপর্যয় (তোমাদের সামনে এসে) হাযির হবে,

৩৫. সেদিন মানুষ একে একে সব কিছুই স্মরণ করবে যা (করার জন্যে সে দুনিয়ায়) চেষ্টা করেছে,

৩৬. সেদিন সে ব্যক্তির জন্যে জাহান্নাম খুলে ধরা হবে, যে (তা) দেখতে পাবে।

৩৭. অতপর যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে-

৩৮. এবং (পরকালের তুলনায়) দুনিয়ার জীবনকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে,

৩৯. অবশ্যই জাহান্নাম হবে তার (একমাত্র) আবাসস্থল;

৪০. (আবার) যে ব্যক্তি তার মালিকের সামনে দাঁড়ানো (-র দিনটিকে) ভয় করেছে এবং (এ ভয়ে) নিজের নফসকে কামনা বাসনা থেকে বিরত রেখেছে,

৪১. অবশ্যই জান্নাত হবে তার অনন্ত ঠিকানা;

৪২. তারা তোমার কাছে জানতে চায় কেয়ামত কখন সংঘটিত হবে?

৪৩. (আসলে) সে সময়ের কথা বর্ণনা করার সাথে তোমার কি সম্পর্ক?

৪৪. তার (আগমনের) চূড়ান্ত (জ্ঞান একমাত্র) তোমার মালিকের কাছেই রয়েছে;

৪৫. তুমি হচ্ছো সে ব্যক্তির জন্যে সাবধানকারী, যে এ (দিনটি)-কে ভয় করে;

৪৬. যেদিন এরা কেয়ামত দেখতে পাবে, সেদিন (এদের মনে হবে) তারা (দুনিয়ায়) এক বিকাল অথবা এক সকাল পরিমাণ সময়ের চাইতে বেশী সময় অতিবাহিত করেনি।

অনুবাদকঃ হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ।
প্রকাশনাঃ আল কোরআন একাডেমী লন্ডন।

No comments:

Post a Comment