Wednesday, January 22, 2020

সূরা আল-মুনাফিকূন

সূরার নামের অর্থঃ

মুনাফিকরা/কপট বিশ্বাসীগণ/ভণ্ড বিশ্বাসীগণ/কপটদল/দ্বিমুখী ব্যক্তিগণ/প্রতারকগণ/ধোঁকাবাজগণ

[মদীনায় অবতীর্ণ- আয়াত ১১, রুকু ০২] [কোরআনে অবস্থান ৬৩, অবতীর্ণের অনুক্রম ১০৪]
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে-

. মোনাফেকরা যখন তোমার কাছে আসে, (তখন) তারা বলে (হে মুহাম্মাদ), আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি অবশ্যই আল্লাহর রসূল (হ্যাঁ) আল্লাহ তায়ালা জানেন তুমি নিসন্দেহে তাঁর রসূল; (কিন্তু) আল্লাহ তায়ালা সাক্ষ্য দিচ্ছেন, মোনাফেকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী,

২. এরা তাদের শপথকে (স্বার্থ উদ্ধারের একটা) চাল বানিয়ে রাখে এবং (এভাবেই) তারা (মানুষদের) আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে, কতো নিকৃষ্ট ধরনের কার্যকলাপ যা এরা করছিলো!

৩. এটা এ কারণেই যে, এরা ঈমান আনার পর কুফরী অবলম্বন করেছে, ফলে ওদের মনের ওপর সিল মেরে দেয়া হয়েছে, ওরা (আসলে) কিছুই বুঝতে পারছে না।

৪. তুমি যখন তাদের দেখবে, তখন তাদের (বাইরের) দেহাবয়ব তোমাকে খুশী করে দেবে; আবার যখন তারা তোমার সাথে কথা বলবে তখন তুমি (আগ্রহভরে) তাদের কথা শুনবেও; (এর উদাহরণ হচ্ছে)- যেমন দেয়ালে ঠেকানো কতিপয় (নিষ্প্রাণ) কাঠের টুকরো; (শুধু তাই নয়,) প্রতিটি (বড়ো) আওয়াজকেই তারা মনে করে তাদের ওপর (আপতিত) এটা (বড়ো) বিপদ; এরা আসলেই (তোমাদের) দুশমন, এদের থেকে তোমরা হুশিয়ার থেকো; আল্লাহর মার তো তাদের জন্যেই, (বলতে পারো) কোথায় কোথায় এদের ঠোকর খাওয়ানো হচ্ছে?

৫. এদের যখন বলা হয়, তোমরা এসো (আল্লাহর রসূলের কাছে), তাহলে আল্লাহর রসূল তোমাদের জন্যে (আল্লাহর কাছে) ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, তখন এরা (অবজ্ঞাভরে) মাথা ঘুরিয়ে নেয় এবং তুমি দেখতে পাবে, তারা অহংকারের সাথে তোমাকে এড়িয়ে চলে।

৬. (আসলে) তুমি এদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করো কিংবা না করো- (দুটোই) তাদের জন্যে সমান; (কারণ) আল্লাহ তায়ালা কখনোই তাদের ক্ষমা করবেন না; আল্লাহ তায়ালা কোনো গুনাহগার জাতিকে হেদায়াত দান করেন না।

৭. এরা হচ্ছে সেসব লোক, যারা (আনসারদের) বলে, আল্লাহর রসূলের (মোহাজের) সাথীদের জন্যে তোমরা অর্থ ব্যয় করো না, (তাহলে আর্থিক সংকটের কারণে) এরা (রসূলের কাছ থেকে) সরে পড়বে; অথচ (এরা জানে না,) আসমানসমূহ ও যমীনের সমুদয় ধনভান্ডার তো আল্লাহ তায়ালারই, কিন্তু মোনাফেকরা কিছুই বুঝতে পারে না।

৮. তারা বলে, আমরা মদীনায় ফিরে গেলে সেখানকার সবল দলটি (মুসলমানদের) দুর্বল দলটিকে সে শহর থেকে অবশ্যই বের করে দেবে; (আসলে) যাবতীয় শক্তি সম্মান তো আল্লাহ তায়ালা, তাঁর রসূল ও (তাঁর অনুসারী) মোমেনদের জন্যে, কিন্তু মোনাফেকরা জানে না!

৯. হে মানুষ, যারা ঈমান এনেছো (দেখো), তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি যেন কখনো তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে দেয়, (কেননা) যারা এ কাজ করবে তারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

১০. আমি তোমাদের যা কিছু অর্থ সম্পদ দিয়েছি, তা থেকে তোমরা (আল্লাহর পথে) ব্যয় করো তোমাদের কারো মৃত্যু আসার আগেই- (মৃত্যু এসে গেলে সে বলবে), হে আমার রব, তুমি যদি আমাকে আরো কিছু কালের অবকাশ দিতে তাহলে আমি তোমার পথে দান করতাম এবং (এভাবেই) আমি তোমার নেক বান্দাদের দলে শামিল হয়ে যেতাম।

১১. (কিন্তু) কারো (নির্ধারিত) ‘সময়’ যখন এসে যাবে, তখন আল্লাহ তায়ালা কখনোই তাকে (এক মুহূর্ত) অবকাশ দেবেন না; তোমরা (দুনিয়ার জীবনে) যা কিছু করছো, আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত রয়েছেন।

অনুবাদকঃ হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ।
প্রকাশনাঃ আল কোরআন একাডেমী লন্ডন।

No comments:

Post a Comment