হুনাইন যুদ্ধের ‘মালে গণিমত’ (যুদ্ধলব্ধ
ধন-সম্পদ) বণ্টন করলেন মহানবী (সাঃ)।
যুদ্ধলব্ধ সব সম্পদই তিনি বণ্টন
করলেন ইসলামে নবদীক্ষিত কুরাইশদের মধ্যে। মদীনার আনসাররা কিছুই পেল না।
মদীনার মুনাফিকরা একে একটা মহা
সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করল। মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টায় লেগে গেল
তারা।
তাদের কুমন্ত্রণায় কতিপয় অদূরদর্শী
আনসার যুবক প্রভাবিত হয়ে পড়ল। তারা প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে লাগল। অনেক
আনসারের মধ্যে এ ভাবনারও সৃষ্টি হলো যে, মহানবী (সাঃ) এবার হয়তো স্বদেশ মক্কাতেই অবস্থান করবেন
এবং আমরা তাঁর সেবা করার সুযোগ পাব না।
এসব কথা আনসারদের মধ্যে ব্যাপকভাবে
কানাঘুষা হতে লাগল।
বিষয়টা মহানবী (সাঃ) জানতে পারলেন।
সকল আনসারকে ডাকলেন তিনি। আনসারদের এ সভায় তিনি প্রশ্ন করলেন, যা তিনি শুনেছেন তা
সত্য কিনা?
আনসার প্রধানগণ খুবই লজ্জিত ও
বিব্রত হলেন। বিনীত কণ্ঠে বললেন তারা, আমাদের দু’একজন যুবকমাত্র এ ধরনের কথা বলেছে, একথা সত্য। সবার
একথা নয়।
তাদের কথা শুনার পর মহানবী (সাঃ)
গণিমতের মাল বণ্টন বিষয়ে বললেন, ‘কুরাইশরা নবদীক্ষিত, বিশেষত তারা যুদ্ধ-বিগ্রহের ফলে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
হয়েছে। তাদের ক্ষতিপূরণ করে সন্তুষ্ট করার জন্যেই এ ব্যবস্থা আমি করেছিলাম। আর
যারা যা প্রত্যাশা করে, তারা
তাইতো পায়।’ বলে
মহানবী (সাঃ) আনসারদের উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি এতে
সন্তুষ্ট নও যে, লোকেরা
ছাগল-ভেড়া নিয়ে বাড়ী যাচ্ছে, আর তোমরা রাসূলকে সাথে নিয়ে বাড়ী ফিরছ?’
আনসাররা সানুনয়ে ও ভক্তিগদগদ কণ্ঠে
নিবেদন করলেন, ‘ইয়া
রাসূলাল্লাহ, আমরা
আপনাকে চাই। আপনাকে পেয়ে, আপনাকে
সেবা করেই আমরা পরিতৃপ্ত ও কৃতার্থ হয়েছি। আমরা যেন এই পরম সম্পদ থেকে বঞ্চিত না
হই।’
মহানবী (সাঃ) বললেন, ‘জীবনে-মরণে কখনই
আনসারদের সাথে তাঁর বিচ্ছেদ হবে না।’
লেখকঃ
আবুল আসাদ
বইঃ
আমরা সেই সে জাতি [তৃতীয় খণ্ড]
No comments:
Post a Comment