এক বাদশাহ তার অত্যন্ত প্রিয় কর্মচারীকে একটি গোপন কথা বললেন।
সাবধান করে দিলেন বারবার, যেন এই কথা কেউ জানতে না-পারে।
কথা গোপন রাখা খুব কঠিন কাজ। অনেকেই সেটা পারে না।
প্রায় বছরখানেক কথাটা গোপন থাকল। তারপর একদিন রাজ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল সেই গোপন কথা। হাটে-মাঠে-ঘাটে সবখানে সবাই জানে সেটা।
বাদশাহ তখন ডেকে পাঠালেন তার প্রিয় কর্মচারীকে। এবং তার প্রাণদণ্ডের আদেশ দিলেন।
কেন এই কথাটি প্রকাশিত হল?
কর্মচারীটিকে নিয়ে যাওয়া হল জল্লাদের কাছে। তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
কর্মচারীটি তখন কাতর অনুনয় করে বলল,
—বাদশাহ, আমাকে ক্ষমা করুন। এই অপরাধের জন্য আমি দায়ী। কিন্তু এক অর্থে
আপনিও দায়ী। আপনি নিজের কথা নিজেই গোপন রাখতে পারেননি। আমার মতো সামান্য
একজন কর্মচারী কীভাবে সেটা গোপন রাখবে? আর আপনি সেটা আশাই-বা করেন কীভাবে?
সমুদ্রের জল বন্ধ করতে না-পারলে নদীর প্রবাহ কি বন্ধ করা সম্ভব?
বাদশাহ তার প্রিয় কর্মচারীর কথা মেনে নিলেন।
মুক্তি দেয়া হল কর্মচারীটিকে।
অনুবাদকঃ আমীরুল ইসলাম
[শেখ সাদীর গল্প ─ লেখকঃ আবু মুহাম্মদ মুসলিহ আল-দীন বিন আবদাল্লাহ শিরাজি (শেখ সাদি বা সাদি শিরাজি বলেও পরিচিত)। অনুবাদকঃ আমীরুল ইসলাম। প্রকাশনাঃ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। গ্রন্থমালা সম্পাদকঃ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। প্রকাশকঃ মোঃ আলাউদ্দিন সরকার]।
No comments:
Post a Comment