একজন পালোয়ান। ইয়া মোটা দশাসই চেহারা তার। বিশাল বপু। যেমন মোটা তেমনই তাগড়া শরীর।
কিন্তু বেচারা খুব মনখারাপ করে বসে আছে রাস্তায়। কেউ একজন তাকে খুব কটু
কথা শুনিয়ে গেছে। রীতিমতো অপমান। বলেছে, সে নাকি দেখতে হাতির মতো।
পালোয়ানের মন খারাপ। বিমর্ষ বদনে সে বসে বসে ভাবছে, এই অপমানের প্রতিশোধ নিতে হবে। সে মোটা, তাতে অন্যের কী আসে যায়!
একজন বুদ্ধিমান লোক যাচ্ছিল সেই পথ দিয়ে। গোমড়ামুখো পালোয়ানকে দেখে সে
সামনে এল, ‘ও হে পালোয়ান ভাই, কী হয়েছে তোমার? মন-খারাপের কারণ কী?
পালোয়ান চুপ করে রইল। কী বলবে সে?
‘কী হে পালোয়ান ভাই—’
পালোয়ান তখন গালে হাত দিয়ে দুঃখী গলায় বলল, “ভাইরে, কী আর বলব। একজন
আমাকে খুব অপমান করে গেছে। সেই অপমানের জ্বালায় জ্বলে মরছি।”
এই-না শুনে হো হো করে হেসে ফেলল বুদ্ধিমান লোকটি।
“ওহে পালোয়ান ভাই, শুনে খুবই আশ্চর্য হলাম। দশ মণ, বিশ মণ বোঝার ভার তুমি
অনায়াসে বইতে পারো—সেই তুমি কিনা সামান্য একটু অপমানের বোঝা বইতে পারছ
না।
মনে রেখো পালোয়ান, মানুষ মাটির তৈরি। মাটির মতোই সহনশীল হওয়া
উচিত আমাদের। প্রকৃত পালোয়ান কখনও শক্তির বাহাদুরি করে না। সে সকলকে ক্ষমা
করে।
কারণ ক্ষমাই মানুষের মহত্তম গুণ।”
অনুবাদকঃ আমীরুল ইসলাম
[শেখ সাদীর গল্প ─ লেখকঃ আবু মুহাম্মদ মুসলিহ আল-দীন বিন আবদাল্লাহ শিরাজি (শেখ সাদি বা সাদি শিরাজি বলেও পরিচিত)। অনুবাদকঃ আমীরুল ইসলাম। প্রকাশনাঃ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। গ্রন্থমালা সম্পাদকঃ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। প্রকাশকঃ মোঃ আলাউদ্দিন সরকার]।
No comments:
Post a Comment