একজন ভালোমানুষের কাছে চতুর এক লোক এসে পায়ে লুটিয়ে পড়ল। মুখে তার কথার খই ফোটে।
ভাইরে, আমি বড়ই বিপদে পড়ে আপনার কাছে এসেছি। আমার বিপদের কথা কীভাবে যে বলি আপনাকে?
না, না, বলে ফ্যালো, শিগগির বলো। সদাশয় ভালোমানুষটি অভয় দিল।
একবার বিপদে পড়ে একজনের কাছ থেকে দশটি টাকা ধার করেছিলাম। সেই টাকা এখনও
শোধ দিতে পারিনি। পাওনাদারের তাগাদায় আমার জীবন প্রায় বিপন্ন। টাকা শোধ
দিতে না-পারলে সে এখন আমাকে ধরে-বেঁধে নিয়ে যাবে। আমাকে মারধোর করবে। আমি
এখন কী করব? আমাকে এই বিপদ থেকে একমাত্র আপনিই বাঁচাতে পারেন।
ভালোমানুষ লোকটি আর কিছু জানতে চাইলেন না। সঙ্গে সঙ্গে দশটি টাকা দিয়ে দিলেন।
চতুর লোকটি বিদায় হল।
তখন পাশে বসে থাকা একজন লোক সাধু ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞেস করল—লোকটির কাতর
অনুনয়-বিনয়ে আপনি তাকে টাকা দিয়ে দিলেন? এমনও তো হতে পারে লোকটা মিথ্যা
বলে টাকা নিয়ে গেল।
সাধু ব্যক্তিটি বললেন—সেটা আমার দেখার ব্যাপার
নয়। লোকটি বিপদের কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকা নিল। সত্যি যদি সে বিপদে
পড়ে থাকে তবে আমি তাকে সাহায্য করলাম। এতে আমার পুণ্য হবে। আর যদি ছলনা
করে থাকে তবে পরে সে যেন আর আমাকে জ্বালাতন না করতে পারে—এইজন্য টাকা দিয়ে
দিলাম। সৎলোকদের সাহায্য করতে হয়। আবার অসৎ লোকদের অখুশি রাখলেও চলে না।
অনুবাদকঃ আমীরুল ইসলাম
[শেখ সাদীর গল্প ─ লেখকঃ আবু মুহাম্মদ মুসলিহ আল-দীন বিন আবদাল্লাহ শিরাজি (শেখ সাদি বা সাদি শিরাজি বলেও পরিচিত)। অনুবাদকঃ আমীরুল ইসলাম। প্রকাশনাঃ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। গ্রন্থমালা সম্পাদকঃ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। প্রকাশকঃ মোঃ আলাউদ্দিন সরকার]।
No comments:
Post a Comment