Sunday, March 15, 2020

শাহাদাতের বাইয়াত

ইয়ারমুকের ভয়াবহ রণক্ষেত্র।

রোমক সম্রাটের ২ লাখ সৈন্যের বিশাল বাহিনী অতুল সমর-সম্ভার নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে সমবেত।

তাদের মুকাবিলায় দাঁড়িয়েছে খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে ৪০ হাজার সৈন্যের মুসলিম বাহিনী।

দুই পক্ষ থেকেই শুরু হয়েছে মরণপণ যুদ্ধ। যুদ্ধের এক পর্যায়ে বিশাল রোমক বাহিনীর চাপে মুসলিম বাহিনীর ব্যুহগুলো ভেঙে পড়ার উপক্রম হলো।

খোদ সেনাপতির তাঁবু বিপন্ন হয়ে উঠল।

ইকরামা বিন আবু জাহলের হৃদয়ের সব আবেগ যেন উথলে উঠল। নিজের ঘোড়া হাঁকিয়ে অগ্রসর হলেন সামনে এবং উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে উঠলেন, “হে রোমকরা, আমি কোন এক সময় স্বয়ং রাসূলের (সাঃ) বিরুদ্ধে (কুফরী অবস্থায়) লড়াই করেছি। আজ কি তোমাদের মুকাবিলায় আমার কদম পিছু হটতে পারে? আল্লাহর কসম, এমনটি কখনও হবে না।

বলে তিনি পেছনে তাকিয়ে তাঁর বাহিনীর উদ্দেশ্যে বললেন, “এসো, কে আমার হাতে মৃত্যুর বাইয়াত করবে?”

চারজন অগ্রসর হলো তাঁর দিকে। তাঁরা ইকরামার হাতে হাত রেখে শাহাদাতের বাইয়াত গ্রহণ করল। এই চারজনের মধ্যে দুজন ছিল ইকরামার দুই ছেলে। তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়ল খালিদ ইবনে ওয়ালিদের তাঁবু লক্ষ্য করে এগিয়ে আসা রোমক সৈন্যদের উপর।

শুরু হলো তাদের মরণপণ লড়াই।

এক এক করে তাঁরা শহীদ হলেন অথবা গুরুতর আহত হয়ে লড়াই করতে অক্ষম হয়ে পড়লেন। গুরুতর আহত ছিলেন ইকরামার দুই পুত্র।

ছুটে এলেন খালিদ ইবনে ওয়ালিদ।

নিহতের স্তূফে পাওয়া গেল হযরত ইকরামার (রাঃ) লাশ। তাঁর নিঃশ্বাস তখনও ছিল। হযরত খালিদ তাঁর মাথা কোলে তুলে নিলেন। তাঁর মুখে ফোটা ফোটা পানি দিতে দিতে বললেন, “আল্লাহর কসম, ইবনে হানতামার (হযরত উমর ফারুকের) ধারণা সঠিক প্রমাণিত হয়নি। তাঁর ধারণা ছিল যে, বনি মাখজুমীরা শাহাদাত লাভ করতে চায় না।

লেখকঃ আবুল আসাদ
বইঃ আমরা সেই সে জাতি তৃতীয় খণ্ড

No comments:

Post a Comment