Saturday, March 14, 2020

উবাদার (রাঃ) সত্যনিষ্ঠা

তখন উসমান (রাঃ)-এর খিলাফত। হযরত মুয়াবিয়া তখন সমগ্র সিরিয়ার গভর্নর। উবাদাহ ইবনে সামিত তাঁর অধীনে একজন শাসক। উবাদাহ (রাঃ) সেই লোক যিনি সত্য কথা, উচিত কথা যখন বলেন, তখন কোথায় কার কাছে বলছেন তার পরোয়া করেন না।

তাঁর বিরোধ বাধল মুয়াবিয়া (রাঃ)-এর সাথে। মুয়াবিয়া (রাঃ) খলিফা উসমান (রাঃ) কে লিখলেন, “উবাদাহ বিন সামিতের কথা ও ভাষণ জনগণকে উত্তেজিত করে এবং বিশৃঙ্খল করে তোলে। তাঁকে সিরিয়া থেকে প্রত্যাহার করে নিন। তা না হলে আমি সিরিয়ার শাসন কাজ পরিত্যাগ করব।

উসমান (রাঃ) উবাদাহ ইবনে সামিতকে মদীনায় ডেকে পাঠালেন।

তিনি এলেন খলিফা উসমান (রাঃ)-এর দরবারে। দরবারে তখন অনেক লোক। উবাদাহ (রাঃ) এক কোনায় চুপ করে বসে পড়লেন। উবাদাহ (রাঃ)-কে দেখতে পেয়েই উসমান (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “বলুন তো কি ঘটনা।

স্পষ্টবাদী উবাদাহ (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন। সত্য প্রকাশের অসীম আবেগে তিনি উদ্দীপ্ত। দরবারের সমাবেশকে লক্ষ্য করে তিনি বললেন, “হে মানুষেরা, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আমার পর আমীরেরা সৎকে অসৎ এবং অসৎকে সৎ-এ পরিবর্তন করবে। অবৈধ কাজকে বৈধ মনে করতে থাকবে। কিন্তু গুনাহর কাজে কারও আনুগত্য জায়েয নয়। তোমরা অবশ্যই অসৎ কাজ থেকে দূরে থাকবে।

আবু হুরাইরা (রাঃ) উবাদাহ (রাঃ)-এর বক্তব্যে কিছু বাধা দিতে চাইলেন।

উবাদাহ ইবনে সামিত সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, “আমরা যে সময় রাসূলুল্লাহর (সাঃ) হাতে বাইয়াত (নবুয়তের ত্রয়োদশ বছরে বাইয়াতে আকাবায় এ বাইয়াত সংঘটিত হয়) করেছিলাম, তখন আপনি সেখানে ছিলেন না। আমাদের বাইয়াতের শর্ত ছিল যে, লোকদের কাছে ভাল কথা পৌঁছাতে থাকবো, খারাপ কথা থেকে বিরত রাখবো। কখনো কারো ভয়ে ভীত হবো না।…..এই বাইয়াত মহানবীর সাথে হয়েছিল। ওয়াদা পূরণ আমাদের অবশ্যকর্তব্য কাজ।

উবাদার (রাঃ) এই কথার পর কারও কোন কথা আর থাকতে পারে না। আর কেউ কোন কথা বলতে সাহস করলো না।

লেখকঃ আবুল আসাদ
বইঃ আমরা সেই সে জাতি তৃতীয় খণ্ড

No comments:

Post a Comment