মদীনার
ছয় যুবক হজ্বে এসেছেন। তখন মদীনার নাম ছিল ইয়াসরিব।
সে
যুগেও হজ্ব হতো, কিন্তু
জাহেলী রীতি অনুসারে।
মক্কার
আকাবা নামক স্থানে তাঁবু গাড়লেন মদীনার সেই যুবকরা।
এই
ছয়জন যুবক একদিন গভীর আলোচনায় মশগুল, একজন অতিথি এলেন তাঁবুর দরজায়।
শ্রদ্ধা
জাগানো সুন্দর সৌম্য-দর্শন এক অতিথি।
অতিথি
সালাম দিলেন যুবকদের উদ্দেশ্যে। তারপর বললেন,
‘আপনারা কি আমার কথা শুনবেন?’
মিষ্টি
কণ্ঠস্বর অতিথির।
যুবকরা
সমস্বরে বলে উঠলো, ‘অবশ্যই
অবশ্যই।’
অতিথি
ব্যক্তিটি ছিলেন মহানবী (সাঃ)।
তিনি
তখন ছয় যুবককে মানুষের জন্যে রাব্বুল আলামিনের খোশখবর শোনালেন, তাওহীদের দাওয়াত গ্রহণের উৎসাহ
দিলেন এবং বললেন, ‘আমি আল্লাহর রাসূল। আল্লাহর বান্দাদের পথ
প্রদর্শনে নিয়োজিত রয়েছি।’
ছয়জন
যুবকই মহানবীর কথা গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন। আল্লাহর রাসূলের কথা শেষ হতেই তাঁরা
বললেন, ‘আল্লাহর যে
কালাম আপনার উপর অবতীর্ণ হয়েছে, তা থেকে আমাদের কিছু শোনান।’
মহানবীর
পবিত্র কণ্ঠে সূরা ইবরাহিম পাঠ হতে লাগলো। কয়েকটি আয়াত পাঠ হতেই চমৎকৃত হয়ে গেলেন
ছয় যুবক। তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, “আল্লাহর কসম, এতো সেই নবী যাঁর
উল্লেখ সবসময় আমাদের শহরের ইহুদীদের মুখে শোনা যায়। ইসলাম গ্রহণে ইহুদীদের আগে
তাদেরই অগ্রসর হওয়া উচিত।”
অতঃপর
তারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে মহানবী (সাঃ)-কে আরজ করলো, ‘হে মুহাম্মাদ (সাঃ), আমরা আপনার দাওয়াত মনে-প্রাণে গ্রহণ করছি এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ এক আপনি তাঁর রাসূল।’
এই
ঘোষণা দেয়ার পর ছয়জনের মধ্য থেকে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও সুদর্শন যুবক আবু উসামা
আসয়াদ বিন যুরারাহ মহানবীর দিকে অগ্রসর হয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল, আপনার হাত
সম্প্রসারিত করুন। আমি এই হাতে ইসলামের বাইয়াত করছি।’
মহানবী
(সাঃ) সানন্দে তাঁর হাত এগিয়ে দিলেন।
প্রথম
বাইয়াত করলেন আসয়াদ বিন যুরারাহ। তারপর তাঁর সাথী পাঁচজন যুবক।
তাঁরা
হলেন মদীনার প্রথম মুসলমান।
এইভাবেই
এই উদ্যমী যুবকদের মাধ্যমে ইসলামের আলো প্রথম প্রবেশ করে ইয়াসরিব বা মদীনায়।
বইঃ আমরা সেই সে জাতি – তৃতীয় খণ্ড
No comments:
Post a Comment