খন্দক যুদ্ধের একটি মুহূর্ত।
মদীনার আনসার প্রধান সা’আদ ইবনে মু’আজ বিশেষ এক কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
মনে তাঁর আনন্দ। পরিখা মুশরিক
বাহিনীকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে। ওদের তর্জন-গর্জন এখন সবই ওপাড়ে। সংখ্যার জোরে
মুহূর্তে মুসলমানদের পিষে ফেলার পর্বতপ্রমাণ অহংকার নিয়ে ওরা ছুটে এসেছিল। দশহাত
গভীর ৬ হাজার হাত দীর্ঘ পরিখায় ওদের অহংকার এসে থুবড়ে পড়েছে।
নিশ্চিন্ত মনে কাজ করছিলেন সা’আদ ইবনে মু’আজ।
হঠাৎ আগুনের মত ছড়িয়ে পড়া খবর সা’আদ ইবনে মু’আজও শুনলেন। মুশরিক বাহিনী
সর্বাত্মক এক আক্রমণ পরিচালনা করেছে। ওরা পরিখা পার হওয়ার চেষ্টা করছে।
খবর শোনার সাথে সাথে সা’আদ উঠে দাঁড়ালেন। পাশ থেকে বর্শা
তুলে নিয়ে ছুটলেন তিনি পরিখার পাড়ে।
তিনি ছুটছেন আর আবৃত্তি করছেন একটা
কবিতার অংশঃ
একটু অপেক্ষা কর, মানুষ আসিতেছে,
সময় পূর্ণ হইলে মরণ তো আসিবেই, সুতরাং মরণে আর ভয়
কি?
পাশেই সা’আদ ইবনে মু’আজের বাড়ি।
মু’আজের উচ্চ কণ্ঠস্বর শুনে তার মা বেরিয়ে
এলেন। দেখলেন সা’আদকে
এবং শুনলেন খবরও।
শুনেই উত্তেজিত ও আবেগময় কণ্ঠে সা’আদের মা সা’আদকে লক্ষ্য করে চিৎকার করে বললেন, ‘বৎস পিছিয়ে পড়েছো, দ্রুত অগ্রসর হও।’
মায়ের উৎসাহ ও আশীর্বাদে দ্রুততর
হলো সা’আদ ইবনে মু’আজের গতি।
তিনি পরিখা তীরে পৌঁছতেই
শত্রুপক্ষের একটা তীর এসে বিদ্ধ করল তাঁকে। গুরতর আহত হলেন তিনি।
এই আঘাত তাকে শাহাদাতের দিকে নিয়ে
গেল।
অচিরেই শাহাদাতের অমৃত সুধা পান
করলেন তিনি।
লেখকঃ
আবুল আসাদ
বইঃ
আমরা সেই সে জাতি [তৃতীয় খণ্ড]
No comments:
Post a Comment