Monday, June 1, 2020

‘ফাতহুম মুবিনে’র প্রথম বন্দী’

ফাতহুম মুবিনবা মক্কা বিজয়ের মহামুহূর্তটি সমাগত।

দশ হাজার মুসলিম সৈন্যের বাহিনী সেদিন গভীর রাতে মক্কার উপকণ্ঠ মাররুজ্‌-জাহরান উপত্যকায় গিয়ে পৌঁছল এবং সেখানেই রাত যাপনের সিদ্ধান্ত নিলো।

মক্কার কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান ও আরও কয়েকজন রাতে মক্কার চারদিকটা পর্যবেক্ষণে বেরিয়েছিল। তারা জানতো না মুসলিম বাহিনী মক্কার উপকণ্ঠে পৌঁছে গেছে। মাররুজ্-জাহরান উপত্যকায় হাজার হাজার আলোর সারি দেখে স্তম্ভিত হলো আবু সুফিয়ান।

রহস্য উদ্ধারের জন্যে আবু সুফিয়ান অতি সন্তর্পণে এগুলো ঐ উপত্যকার দিকে।

হঠাৎ আবু সুফিয়ান বন্দী হয়ে গেলো হযরত উমর (রাঃ)-এর হাতে। হযরত উমর (রাঃ) আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে পাহারা দিচ্ছিলেন মুসলিম বাহিনীর অগ্রবর্তী দিকটা।

হযরত উমর (রাঃ) আবু সুফিয়ানকে মহানবীর (সাঃ) সামনে হাজির করে বললেন, সত্যের শত্রুদের সমূলে উৎপাটিত করার শুভমুহূর্ত সমাগত। আবু সুফিয়ান বন্দী। প্রতিশোধ গ্রহণ ও প্রতিফল দানের সময় উপস্থিত।

মহানবী (সাঃ) এ প্রসঙ্গে না গিয়ে আবু সুফিয়ানকে সম্বোধন করে বললেন, আবু সুফিয়ান, এখনও তুমি সেই করুণা-নিধান ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহুকে চিনতে পারোনি?

আবু সুফিয়ান বিমর্ষভাবে আমতা আমতা করে বললো, ‘তা, এখন পারছি বৈ কি। আমাদের ঠাকুর কেউ থাকলে আমাদের পানে তাকাতো।

আবু সুফিয়ানের উত্তরে উৎসাহিত হয়ে মহানবী (সাঃ) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আচ্ছা আবু সুফিয়ান, আমি যে আল্লাহর প্রেরিত সত্য নবী, এ ব্যাপারে এখনও কি তোমার সন্দেহ আছে?’

আবু সুফিয়ান বললো, ‘এখনও কিছু কিছু সন্দেহ আছে?’

মহানবী (সাঃ) বন্দী আবু সুফিয়ানের কথায় বিন্দুমাত্রও ক্রুদ্ধ হলেন না এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও গ্রহণ করলেন না।

শুধুমাত্র মহানবী (সাঃ) আবু সুফিয়ান যখন ফিরে যাবার জন্যে উদ্যত হলেন, তখন তাকে আদেশ করলেন সকাল পর্যন্ত থেকে যেতে। মহানবী (সাঃ) বোধ হয় চেয়েছিলেন আবু সুফিয়ান ফিরে গিয়ে গোঁট পাকাবার কোন সুযোগ না পাক।

লেখকঃ আবুল আসাদ
বইঃ আমরা সেই সে জাতি [তৃতীয় খণ্ড]

No comments:

Post a Comment