আনাস ইবনে নযর বদর যুদ্ধে যোগ দিতে
পারেননি। মুসলমানদের প্রথম অগ্নি-পরীক্ষায় শরীক হতে না পারায় ভীষণ দুঃখ তাঁর।
দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি একদিন মহানবী (সাঃ)-কে বললেন, আল্লাহ যদি
মুশরিকদের বিরুদ্ধে কোন সুযোগ আমাকে দেন, তাহলে দেখবেন কিভাবে যুদ্ধ করি।
সুযোগ এলো আনাস ইবনে নযরের জীবনে।
ওহোদ যুদ্ধের দিন।
প্রচণ্ড যুদ্ধ।
এক মহাসন্ধিক্ষণে মুসলমানরা
ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ল।
তলোয়ার হাতে আনাস ইবনে নযর শক্ত
হয়ে দাঁড়ালেন। চিৎকার করে বললেন মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে, এদের (সাহাবাদের)
কৃতকর্মের জন্যে আমি আপনার কাছে অক্ষমতা প্রকাশ করছি, আর ওদের (কাফেরদের)
কাজের সাথে আমার সম্পর্কহীনতা ঘোষণা করছি।
তারপর ছুটলেন আনাস ইবনে নযর
যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে। পথে দেখা হলো সাআদ ইবনে মু’য়াযের সাথে। বললেন আনাস সাআদকে, ‘এ মুহূর্তে
জান্নাতই আমার একমাত্র কাম্য, ওহোদের প্রান্তভাগ থেকে আমি জান্নাতের সুগন্ধি পাচ্ছি।’
যুদ্ধের পরে আনাস ইবনে নযরকে শহীদ
অবস্থায় পাওয়া গেল যুদ্ধক্ষেত্রে। তাঁর দেহে তলোয়ার, বর্শা ও তীরের আশিটিরও অধিক জখম।
মুশরিকরা নাক, কান
কেটে ও চোখ উপড়িয়ে তাঁর লাশকে এতোটাই বিকৃত করেছিল যে বোন ছাড়া আর কেউ তাকে চিনতে
পারেনি।
ধারণা করা হয়, কুরআন শরীফের এই
আয়াত “মুমিনদের মধ্য থেকে
কিছু সংখ্যক আল্লাহর কাছে কৃত তাদের ওয়াদা বাস্তবে রূপ দিয়ে দেখিয়েছেন”- আনাসের শাহাদাত
উপলক্ষেই নাযিল হয়।
লেখকঃ
আবুল আসাদ
বইঃ
আমরা সেই সে জাতি [তৃতীয় খণ্ড]
No comments:
Post a Comment