খন্দকের যুদ্ধ চলছে। আরব-খ্যাত বীর
আমর হযরত আলীর হাতে নিহত এবং ইকরামা ইবনে আবু জাহল ব্যর্থ হবার পর এবার মক্কায়
মুশরিক সৈন্যের শেষ বড় ভরসা খালিদ ইবনে ওয়ালিদ এগিয়ে এলেন।
খালিদ বাছাই করা সৈন্য নিয়ে একটা
অজেয় বাহিনী গঠন করলেন। দীর্ঘ পরিখা পর্যবেক্ষণ করার পর খালিদ আক্রমণের জন্যে সে
স্থানটিই বেছে নিলেন যেখানে মহানবী অপেক্ষা করছেন।
তার কৌশল হলো, মহানবীর (সাঃ)
অবস্থান স্থলে যদি আকস্মিক সর্বাত্মক আক্রমণ কেন্দ্রীভূত করা যায়, যদি কোনভাবে
মহানবীর অবস্থান এলাকায় বিপর্যয় ঘটানো যায়, তাহলে মুসলমানদের ভীত-সন্ত্রস্ত ও দুর্বল করা যাবে এবং
সেই সুযোগে অরক্ষিত এ স্থান দিয়ে পরিখা অতিক্রম করা সম্ভব হবে।
এই পরিকল্পনা অনুসারে দুর্ধর্ষ
সেনাপতি খালিদ তার কথিত ‘অজেয়’ বাহিনী নিয়ে
আকস্মিকভাবে প্রচণ্ড আক্রমণ পরিচালনা করলেন মহানবীর অবস্থান স্থলের উপর।
ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। খালিদের
লক্ষ্য হলো পরিখার তীর থেকে মহানবীর বাহিনীকে হটিয়ে দিয়ে তাদের পরিখা পাড় নিরাপদ
করা, আর মুসলিম বাহিনীর
চেষ্টা মুশরিক বাহিনীকে পরিখার তীর থেকে দূরে রাখা।
আক্রমণের বিরতি নেই। আক্রমণের ঢেউ
একের পর এক এসে আঁছড়ে পড়ছে। এ যেন সাগরে অফুরন্ত ঢেউ-এর অব্যাহত আঘাত।
যুদ্ধ এমন এক ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছল
যে, মহানবী (সাঃ) এবং
তার সাথীরা নামায পড়ার সময় পর্যন্ত কেউ বের করতে পারলেন না।
খালিদ এভাবে তাঁর আক্রমণ কয়েকদিন
পর্যন্ত অব্যাহত রাখলেন। কিন্তু শেষে তাঁর ‘নির্বাচিত দুর্ধর্ষ’ সৈন্যরা ক্লান্ত ও অবসন্ন হয়ে পড়ল। কিন্তু পরিখার ওপারে
মুসলমানরা তখনও অস্ত্র উচিয়ে শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে।
খালিদ ইবনে ওয়ালিদ সেদিকে হতাশ
চোখে তাকিয়ে ভাবতে বাধ্য হলেন, পরিখা রক্ষাকারী মুসলিম সেনা-প্রাচীর ভেদ করা বা ভাঙ্গা
তাদের পক্ষে সম্ভব নয় এবং পরিখা পার হবারও তাদের কোন সুযোগ নেই।
লেখকঃ
আবুল আসাদ
বইঃ
আমরা সেই সে জাতি [তৃতীয় খণ্ড]
No comments:
Post a Comment