ওহোদ যুদ্ধের এক মহা সন্ধিক্ষণ।
মুসলিম বাহিনীর জয় বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। মুসলিম বাহিনীর পেছনে ওহোদ পাহাড়ের এক
গলিপথে মহানবী (সাঃ) ৫০ জনের একটি ক্ষুদ্র দলকে পাহারায় রেখেছিলেন। তাদের উপর
নির্দেশ ছিল, তাদের
শরীরের গোস্ত পাখিরা ঠুকরে যদিও খায় এবং রণাঙ্গনের মুসলিম সৈন্য সবাই যদি মরেও যায়
তবু তারা যেন নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত গলিপথ ত্যাগ না করে। সুদক্ষ সেনাপতি মহানবী
(সাঃ) নিশ্চিতই বুঝেছিলেন যে, মুসলিম বাহিনীকে পেছন থেকে আক্রমণের জন্য মক্কার মুশরিক
বাহিনী অবশ্যই কিছু লোক এ গলিপথের পেছনে রাখবে।
যুদ্ধ জয়ের আনন্দে পাহাড়ের এই
গলিপথে মোতায়েন সৈন্যদের অধিকাংশ গলিপথ ত্যাগ করে শত্রুমুক্ত রণক্ষেত্রের দিকে
ছুটতে শুরু করেছিল।
মোতায়েন এই ক্ষুদ্র দলের সেনাপতি
আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের প্রাণপণ চেষ্টা করলেন মহানবীর (সাঃ) আদেশ স্মরণ করিয়ে দিয়ে
ওদের নিবৃত্ত করতে। ‘আমাদের
সম্পূর্ণ জয় হয়েছে, এখন
এখানে আর বসে থাকব কেন’- এই
যুক্তি তুলে তারা দলনেতা আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়েরের নিষেধ উপেক্ষা করল।
কিন্তু আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের
কয়েকজন সাথী নিয়ে মহানবী (সাঃ) নির্দেশিত স্থান থেকে এক ইঞ্চি পরিমাণও নড়লেন না।
পাহাড়ের সেই গলিপথে খালিদ বিন
ওয়ালিদের নেতৃত্বে পাহাড়ের পেছনে ওৎ পেতে থাকা মুশরিক সৈন্যের দু’শ’ অশ্বারোহীর একটা বাহিনী এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল
আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের এবং তাঁর কয়েকজন সাথীর উপর। তাঁরা কয়েকজন প্রথমে তীর ছুড়ে, তারপর তলোয়ার দিয়ে
শত্রুদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করলো। তাদের আপ্রাণ চেষ্টা ব্যর্থ হলো। তারা আঘাতে
আঘাতে জর্জরিত হয়ে এক এক করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। অক্ষত থাকা অবস্থায় একজন শত্রু
সৈন্যকেও তাদেরকে অতিক্রম করতে দেয়নি।
লেখকঃ
আবুল আসাদ
বইঃ
আমরা সেই সে জাতি [তৃতীয় খণ্ড]
No comments:
Post a Comment