Monday, June 1, 2020

একমাত্র আল্লাহ’ই আমাদের প্রানের মালিক

মক্কা বিজয়ের পর মহানবী (সাঃ) মক্কাবাসীর জন্যে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন।

এরপরও কিছু পাষন্ড প্রকৃতির মানুষ মহানবী (সাঃ)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র আঁটলো

এমনই এক মদ্যপ ও পাষন্ড ছিল ফুজালা ইবনে উসার। অপরাধীদের আড্ডাখানা, মদের দোকান আর বেশ্যালয়ই ছিল তার স্থান।

জাত-অপরাধী ফুজালা মহানবী (সাঃ)-কে হত্যা করার জন্যে কাবায় পৌঁছে দেখলো, মহানবী (সাঃ) নিবিষ্ট মনে তাওয়াফ করছেন, আল্লাহর ধ্যান ছাড়া কোনদিকে তাঁর দৃষ্টি নেই।

ফুজালা একে তার জন্যে এক মহাসুযোগ বলে মনে করলো।

অস্ত্রটা কাপড়ের আড়ালে রেখে অত্যন্ত সন্তর্পণে মহানবীর (সাঃ) দিকে এগুলো ফুজালা।

ফুজালা তখন মহানবীর (সাঃ) একেবারে কাছে পৌঁছে গেছে।

মহানবী (সাঃ) ফুজালার দিকে তাকালেন।

বললেন, ‘কে, ফুজালা নাকি?‘

মহানবী (সাঃ) বললেন, ‘কি মতলব আঁটছো?’

অন্তরটা কেঁপে উঠলো ফুজালার। বললো সে, ‘জ্বি, কিছু না। এই আল্লাহ আল্লাহ করছি।

মহানবী (সাঃ) ফুজালার চোর ধরা পড়ার মতো দুর্দশাকর অবস্থা দেখে হাসি সম্বরণ করতে পারলেন না। মধুর হেসে তিনি বললেন, ‘বেশ কথা, ফুজালা। সেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো।

ফুজালা বুঝলো তার গোপন অভিসন্ধি মহানবী(সাঃ) কাছে ধরা পড়ে গেছে।

ফুজালার অবস্থা তখন অবর্ণনীয়। ভয়, লজ্জা, অনুতাপে অভিভূত ও বিমূঢ় হয়ে পড়লো সে।

বুকের ভেতর তখন তার অসহ্য তোলপাড়।

বিমূঢ়, নিশ্চল ফুজালার বুকে মহানবী (সাঃ) তাঁর ডান হাত রাখলেন।

ফুজালা স্বয়ং বলেছেন, ‘মহানবীর হাতের স্পর্শ পাওয়ার সাথে সাথে আমার মনের সমস্ত চাঞল্য ও সকল অশান্তি দূর হয়ে গেলো। আমি এক স্বর্গীয় শান্তি ও অনির্বচনীয় তৃপ্তি লাভ করলাম।’ ফুজালা হয়ে গেলেন নতুন মানুষ।

মহানবীর স্পর্শে ধন্য পবিত্র দেহ ও শুদ্ধ হৃদয় নিয়ে ফুজালা ছুটলেন তার বাড়ীর দিকে।

পথে দেখা হলো ফুজালার বড় আদরের, বড় গৌরবের রক্ষিতা-সুন্দরীর সাথে।

রক্ষিতা সুন্দরী বললো, ‘প্রাণেশ্বর ফুজালা, এভাবে কোথায় ছুটছো? এসো আমার কাছে।

ফুজালা মুহূর্তের জন্যে না দাঁড়িয়ে রক্ষিতার দিকে দ্বিতীয়বার না তাকিয়ে ছুটতে ছুটতে বলতে লাগলেন, ‘একমাত্র আল্লাহ’ই আমাদের প্রাণের মালিক, তাকেই প্রেম করো, শান্তি পাবে। আর নয়, আল্লাহ ও ইসলাম আমাকে তোমার থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।

লেখকঃ আবুল আসাদ
বইঃ আমরা সেই সে জাতি [তৃতীয় খণ্ড]

No comments:

Post a Comment