উমারের (রাঃ) খিলাফত। খলীফা
হওয়ার পূর্বে উমার ব্যবসা করে পরিবার চালাতেন। যখন খলীফা নিযুক্ত হলেন,
তখন জনসাধারণের
ধনাগার (বাইতুলমাল) থেকে অতি সাধারণভাবে জীবন ধারণের উপযুক্ত অর্থ তাঁকে ও তাঁর পরিবারের জন্য
দেয়া হলো। বছরে মাত্র দু‘প্রস্থ পোশাক।
পারস্য ও রোম সাম্রাজ্যের শক্তি যাঁর কাছে নত, সেই দোর্দন্ড প্রতাপ খলীফা
উমার সামান্য অর্থ পান জীবনধারণের জন্য।
হযরত আলী, উসমান ও তালহা ঠিক করলেন খলীফার এ
মাসোহারা যথোপযুক্ত নয়, আরও
কিছু অর্থ বাড়িয়ে দেয়া হোক। কিন্তু
কে এই প্রস্তাব খলীফা উমারের কাছে পেশ করবে। অবশেষে উমারের কন্যা ও রাসূলের (রাঃ) স্ত্রী হাফসাকে (রাঃ)
তাঁর কাছে এই প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য
অনুরোধ করা হলো। হাফসা (রাঃ) পিতার নিকট এই প্রস্তাব তুলতেই খলীফা উমার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন।
রুক্ষস্বরে তিনি প্রশ্ন করলেন, “কারা এই প্রস্তাব
করেছে?” হাফসা নিরুত্তর। পিতাকে তিনি কি উত্তর
দেবেন? সাহস হলোনা। খলীফা
বললেন, “যদি জানতাম কারা এই প্রস্তাব তোমার
মারফতে পাঠিয়েছে। তবে তাদের
পিটিয়ে আমি নীল করে দিতাম। বেটি, তুমিতো জান, কি
পোশাক রাসূল (সাঃ) পরিধান
করতেন, কিরূপ খাদ্য তিনি গ্রহণ করতেন, কি
শয্যায় তিনি শয়ন করতেন। বলতো,
আমার
পোশাক, আমার খাদ্য, আমার
শয্যা কি তার চাইতে নিকৃষ্ট?”
হাফসা উত্তর দিলেন,
“না।” খলীফা বললেন, “তবে যারা এই প্রস্তাব করে পাঠিয়েছে,
তাদের বলো, আমাদের নবী জীবনের যে আদর্শ স্থাপন করে গেছেন
তা থেকে আমি
এক চুলও বিচ্যুত হবে না।” সে
আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে---।
সহজ অনাড়ম্বর
ও নিঃস্বার্থ জীবন যাপন সত্যিকার মানুষের আদর্শ——সংযত ও সুনিয়ন্ত্রিত যার জীবন নয়, সে কি করে শহীদের রক্তাক্ষরে লেখা
সত্যের জীবনকে গ্রহণ করবে? খলীফা
উমারও এক দিন আততায়ীর হস্তে নিহত হন। সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে চলেছিলেন এই তাঁর অপরাধ।
খলীফা উমার শহীদ হয়েছেন কবে, কিন্তু সত্যের
নির্ভীক সাধক শহীদ উমার আজও বেঁচে আছেন দেশ ও জাতির দিগদর্শনরূপে।
লেখকঃ আবুল আসাদ (আমরা সেই সে জাতি-প্রথম খন্ড)
লেখকঃ আবুল আসাদ (আমরা সেই সে জাতি-প্রথম খন্ড)
No comments:
Post a Comment