খিলাফতের পবিত্র ও গৌরবউজ্জ্বল শাসনব্যবস্থা থেকে আরব ভূমিকে ছিনিয়ে নিয়ে যারা আরবে রাজতন্ত্র ও স্বেচ্ছাচারিতা
প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ব্যক্তি হলেন
আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ। জন্মঃ ১৫ জানুয়ারি ১৮৭৬ এবং মৃত্যুঃ ৯ নভেম্বর ১৯৫৩।
আরব বিশ্বে তিনি সাধারণভাবে আবদুল আজিজ বা ইবনে সৌদ বলে পরিচিত। তিনি
আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা ও সৌদি আরবের প্রথম বাদশাহ। এই ব্যক্তি
আমৃত্যু খিলাফতের সবচেয়ে বড় দুশমন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে
সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।
ব্রিটিশদের দালালিতে এই ব্যক্তি এমন পরাকাষ্টা দেখিয়েছেলেন যে, তার
প্রতিদন্ধী সকল দালালকে পরাজিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন। তিনি তার প্রধান
প্রতিদন্ধী দালাল হুসাইন বিন আলীকে (জন্মঃ ১৮৫৪ এবং মৃত্যুঃ ৪ জুন, ১৯৩১) পরাজিত করতে সমর্থ হলে আরব ভূমিতে
ব্রিটিশদের দালালিতে তার প্রতিধন্ধীর অবসান ঘটে। তিনি পরিপূর্ণভাবে
ব্রিটিশদের সন্তুষ্টি অর্জন করে নিতে সক্ষম হন।
১৯৩২ সালের ২৩
সেপ্টেম্বর ইবনে সৌদ তার শাসনাধীন অঞ্চলগুলোকে সৌদি আরব হিসেবে একীভূত করেন
এবং নিজেকে এর বাদশাহ ঘোষণা করেন। আল সৌদ বংশের নাম অনুসারে দেশের নতুন
নাম রাখা হয় “Kingdom of Saudi Arabia” (কিংডম অব সৌদি এরাবিয়া)।
এই স্বীকৃত জালেম ব্যক্তিও তার শাসনামলে জনগণের প্রতি কিছু ইনছাপূর্ণ বিচার করেছিলেন।
এক দিনের ঘটনা।
ইবনে সউদ তাঁর দরবারে বসেছিলেন। স্থানীয় শেখ ও গোত্র সর্দারেরা তাঁর
চারদিকে ঘিরে বসেছিল। এ সময় একজন মহিলা এসে নালিশ করল, তার প্রতিবেশীর গরু
তার বাগানে ঢুকে বাগানের সবটা ক্লোভার গাছ খেয়ে ফেলেছে।
ইবনে সউদ
মহিলার প্রতিবেশীকে দরবারে হাজির করার পর তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে শপথ করে
অভিযোগ অস্বীকার করল। অবশেষে ইবনে সউদ কসাইকে নির্দেশ দিলেন গরু জবাই করে
পেট ফাঁড়ার জন্যে। গরুর পেট ফেঁড়ে গরুর পেটে ক্লোভার গাছ পাওয়া গেল।
ইবনে সউদের রায়ে মহিলার প্রতিবেশী দোষী সাব্যস্ত হলো। রায় অনুসারে তাকে
মহিলার ক্লোভার গাছের পুরো ক্ষতিপূরণ দিতে হলো এবং মিথ্যা শপথ করার জন্য
দিতে হলো বিরাট রকমের জরিমানা।
লেখকঃ আবুল আসাদ (আমরা সেই সে জাতি-দ্বিতীয় খন্ড)
সম্পাদনাঃ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম।
No comments:
Post a Comment