Saturday, January 5, 2019

নিপীড়ন আনলো নিপীড়িতের সাফল্য

একদিন মহানবী (সাঃ) কাবার চত্বরে একাকী বসে আছেন। তিনি আপন ভাবে বিভোর। আবু জাহেল গিয়ে সেখানে উপস্থিত হলো। নানা প্রকার ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে মহানবীর (সাঃ) ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চেষ্টা করলো। কিন্তু অনেক চেষ্টাতেও তাঁর মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারলো না। অবশেষে নবীকে (সাঃ) লক্ষ্য করে সে অনেক গালমন্দ করলো। আবু জাহেলের এই মূঢ়তায় মহানবী (সাঃ) ব্যথিত হলেন। ফিরে এলেন তিনি বাড়িতে।

মক্কার একজন ক্রীতদাসী সব ঘটনা দেখল। সব কথা সে এসে মহানবীর পিতৃব্য হামজাকে (রাঃ) বলে দিল। হামজা সবে শিকার থেকে ফিরেছেন। ভ্রাতুষ্পুত্রের প্রতি আবু জাহেলের আচরণের কথা শুনে ক্রোধে জ্বলে উঠলেন। প্রশ্ন তাঁর মনে তাঁর সৎ ও সাধু সজ্জন ভাতিজা কি দোষ করেছে যে সবাই তাঁর উপর অত্যাচার করবে? সে কোন কথাটি খারাপ বলে?

হামজা শিকারের ধনুক কাঁধে নিয়ে আবু জাহেলের সন্ধানে বের হলেন। কাবা ঘরে তাকে পেয়ে সক্রোধে ধনুক দিয়ে তার মাথায় আঘাত করতে লাগলেন এবং হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠলেন, “পাষণ্ড! আর তুই মুহাম্মাদের উপর অত্যাচার করবি? আচ্ছা, আমিও মুহাম্মাদের ধর্ম গ্রহণ করেছি, কি করবি কর।

অতঃপর হামজা চলে এলেন মহানবীর (সাঃ) কাছে। মহানবীকে বললেন, “আনন্দিত হও ভাতিজা, আবু জাহেলকে শায়েস্তা করেছি।

মহানবী (সাঃ) সব বুঝলেন। কিন্তু আনন্দ কিংবা কৃতজ্ঞতার কোন ভাবই তাঁর মুখে প্রকাশ পেল না। তিনি বললেন, “চাচা, এতে আনন্দের কিছুই নেই। যদি শুনতাম যে আপনি সত্যকে গ্রহণ করেছেন, তাহলে তা আমার জন্য আনন্দের ব্যাপার হত।

হামজার হৃদয় দুলে উঠলো। আরও মনে পড়লো, মুহাম্মাদের ধর্ম গ্রহণের কথা তিনি আবু জাহেলকে বলেই এসেছেন। এবার অন্তর থেকে তাঁর সাক্ষ্য বেরিয়ে এলো 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু'

এইভাবে কুরাইশদের প্রতিদিনের অত্যাচার ইসলামের নতুন নতুন সাফল্যই এনে দিতে লাগলো।

লেখকঃ আবুল আসাদ (আমরা সেই সে জাতি-দ্বিতীয় খন্ড)

No comments:

Post a Comment