Saturday, January 5, 2019

ঈমান যেখানে সবার বড়

ইসলামের জন্য অনুকূল মদীনা মুনাওয়ারায় হিজরতের স্থির সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পর মহানবী (সাঃ) মক্কার মুসলমানদের নির্দেশ দিলেন চুপে চুপে একে একে হিজরত করার জন্য। মহানবীর (সাঃ) এ নির্দেশ পাবার পর সবাই অত্যন্ত গোপনে হিজরতের জন্য প্রস্তুত হতে লাগলেন। কিন্তু কথাটা গোপন থাকলো না। শিকারগুলো যাতে পালাতে না পারে সেজন্য বিধর্মী কুরাইশরা সতর্ক হয়ে গেল। এর মধ্যেই মুসলমানরা একা একা অথবা একাধিকজন মিলে বাড়ি-ঘর, সহায়-সম্পত্তি সব ফেলে মদিনায় হিজরত করতে লাগলেন।

উম্মে সালামা এবং তার স্বামী আবু সালামা হৃদয় বিদারক এক পরীক্ষার সম্মুখীন হলেন হিজরতের সময়। উম্মে সালামার পিতার গোত্রের লোকেরা এসে উম্মে সালামাকে কেড়ে নিয়ে যেতে চাইলো, আর আবু সালামার গোত্রের লোকেরা এসে আবু সালামার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে কেড়ে নিল। স্ত্রী ও শিশুর কান্নায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হলো। সব কান্না উপেক্ষা করে আবু সালামার স্ত্রী ও শিশুকে কুরাইশরা কেড়ে নিয়ে গেল। ক্রন্দনরত আবু সালামার ঈমানই কিন্তু সবার উপর বিজয়ী হলো। তিনি চোখ দুটি মুছে মদিনার পথে যাত্রা করলেন।

আবু সালামা চলে যাবার পর উম্মে সালামার চোখের পানি কোনদিন শুকায়নি। এক বছর পর আত্মীয়স্বজনদের মন নরম হলো। তারা শিশুসহ উম্মে সালামাকে এক উটে তুলে দিল। একমাত্র ঈমানের শক্তি সম্বল করে উম্মে সালামা মদীনার পথে যাত্রা করলেন। পথিমধ্যে দেখা হলো উসমান ইবনে তালহার সাথে। তিনি সবিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করলেন, "তোমার সাথে আর কে আছে?" উম্মে সালামা উত্তরে বললেন, "এই শিশু আর আল্লাহ।" উত্তর শুনে উসমান ইবনে তালহা বলেছেন, "তার বুক কেঁপে উঠল।" তিনি উম্মে সালামাকে মদীনায় পৌঁছে দিলেন।

লেখকঃ আবুল আসাদ (আমরা সেই সে জাতি-দ্বিতীয় খন্ড)

No comments:

Post a Comment