মক্কার ঘরে ঘরে এখন
তাওহীদের দাওয়াত মুখ্য আলোচনার বিষয়। এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ইসলামের দাওয়াত মক্কার সমাজ
-জীবনের গভীর থেকে গভীরে প্রবেশ করতে লাগলো। সেই সাথে বিস্তার ঘটতে লাগলো প্রতিক্রিয়ারও।
ইসলামের ধীরগতি বিস্তার আবু লাহাবদের দৃষ্টি এড়ালো না। শক্তির জোরে বাধা দেয়ার
একটা মানসিকতা
তাদের মাঝে দানা বেঁধে উঠলো। কিন্তু আল্লাহর নবী এই ইবলিসী প্রতিক্রিয়ার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করবেন কেন?
হকের দাওয়াত অবিরাম
পৌঁছিয়েই চলতে হবে- মানুষের ঘরে ঘরে প্রতিটি কানে কানে।
মহানবী (সাঃ) সাফা
পর্বতে দাঁড়িয়ে দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু সমাজের মিলন কেন্দ্র আল্লাহর ঘর কাবায় গিয়ে মানুষের
কাছে তাঁর দাওয়াত পৌঁছানো হয়নি এখনও।
একদিন কতিপয় মুসলিম
সাথী নিয়ে তিনি কাবায় এলেন। সেখানে অনেক মানুষ- কাবার চারদিকের বাসিন্দা। সবাই
নবীর (সাঃ) স্বজন- স্বগোত্র। মহানবী (সাঃ) সেখানে হাজির হয়ে ইসলামের কথা, তাওহীদের দাওয়াত উচ্চারণ করছিলেন। প্রতিক্রিয়ার
আগুন জ্বলে উঠলো সঙ্গে সঙ্গেই।
প্রথমে কানা কানি,
তারপর শোরগোল।
প্রতিক্রিয়ার শক্তি এই প্রথমবারের মত সংঘবদ্ধভাবে নবীর (সাঃ)
উপর দৈহিক আক্রমণের
ঔদ্ধত্য নিয়ে ছুটে এল। খাদিজার সন্তান (পূর্বস্বামীর) তরুণ মুসলিম হারিস ইবনে আবিহালাহ তাদের
সামনে দাঁড়ালেন। প্রতিবাদ করলেন। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির সমস্ত ক্রোধ গিয়ে
তাঁর উপর পড়লো। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হলেন হারিস। তাঁর দেহের লাল
রক্তের স্রোত রঞ্জিত করলো কাবার চত্বরকে। হারিস শহীদ হলেন- ইসলামের
প্রথম শহীদ।
আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার
ছোট্ট কাফিলা এই প্রথম এক জীবনের কুরবানি দিল। শুরু হলো প্রতিক্রিয়ার সাথে সেই চিরন্তনী সংঘাত
আর রক্তরঞ্জিত পথযাত্রার।
লেখকঃ আবুল আসাদ (আমরা সেই সে জাতি-দ্বিতীয় খন্ড)
No comments:
Post a Comment